পোস্টগুলি

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রী কৃষ্ণ কেন অর্জুনের থেকে কর্ণের প্রশংসা বেশী করত ? - #অজিত মাহাত

ছবি
মহাভারত - কর্ণ - Spiritual Ajit মহাভারতের যুদ্ধ চলার সময় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের থেকে কর্ণের বেশি প্রশংসা করত । সেই জন্য অর্জুন , কর্ণের মৃত্যুর পর অহংকার বশত শ্রী কৃষ্ণকে বললেন ; হে কৃষ্ণ ! তুমি আমার মিত্র হয়েও বারবার কর্ণের ই প্রশংসা করছো ; তুমি আমার পক্ষে না কর্ণের । শ্রী কৃষ্ণ মধুর বাক্যে বললেন , অবশ্যই তোমার পক্ষে।  তাই যদি হয় , তাহলে কর্ণের এত প্রশংসা কেন ; যেখানে আমার তীরের আঘাতে কর্ণের রথ দশ পা পেছনে চলে যেত কিন্তু কর্ণের তীরের আঘাতে আমার রথ মাত্র দুই পা পেছনে আসত । আমার তীরে কর্ণের মৃত্যুর পরও কিভাবে বলছো কর্ণ একজন মহান যোদ্ধা । শ্রী কৃষ্ণ বললেন , তুমি তো জানো পার্থ , আমিই পরমাত্মা , এই ত্রিলোক এর ভার আমিই বহন করছি । যেখানে আমি স্বয়ং সম্পূর্ণ বিশ্বের ভার নিয়ে তোমার  রথেই উপস্থিত আছি , এবং মহাবীর হনুমানের পতাকা তোমার রথের উপর উড়ছে ; সেখানে একজন সাধারণ যোদ্ধার পক্ষে কি বিন্দুমাত্র এই রথ পেছানো সম্ভব ! নিঃসন্দেহে কর্ণ একজন মহান যোদ্ধা । কর্ণ যদি ধর্মের পথে থাকতো , তোমার পক্ষেও তাকে পরাজিত করা অসম্ভব হয়ে উঠত । অধর্ম পক্ষ নেওয়ায় কর্ণের পরাজয় ঘটেছে । শ্রেষ্ঠ হওয়ার ...

যোগ কাকে বলে ? What is Yoga ? - #অজিত মাহাত

ছবি
যোগ কাকে বলে ? - Spiritual Ajit যোগ কথার আক্ষরিক অর্থ হল কোনো কিছুর সাথে যুক্ত হওয়া । আধ্যাত্মিক মতে আত্মার সাথে পরমাত্মার যুক্ত হওয়ার পদ্ধতির নাম হল যোগ । মানুষ সাধারণত স্মৃতির উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে । স্মৃতি হল অতীতের জ্ঞান ও অনুভব । অতীতের সিদ্ধান্ত নেওয়া কোন কিছু বিষয় বর্তমানে প্রয়োগ করতে চায় । যেমন কেও যদি অনেক দিন আগে কাওকে অপছন্দ করেছে , বর্তমানেও সে তাকে অপছন্দ করবে । সে অতীতের স্মৃতি নিয়ে বর্তমানে বেঁচে আছে । বর্তমানেও তার এটাই সিদ্ধান্ত , সে তাকে অপছন্দ করে । কিন্তু এই সিদ্ধান্ত ভূল । অতীতের কোন খারাপ কাজের জন্য সে তাকে অপছন্দ করেছিল , কিন্তু বর্তমানে সে খারাপ কাজ নাও করতে পারে । কাল তাকে অপছন্দ ছিল ; আজও তাকে অপছন্দ করা যুক্তি সঙ্গত নয় । অতীতের স্মৃতি নিয়ে জীবন বাঁচলে , বর্তমানে আপনার জন্য যে সুখ , শান্তি , সমৃদ্ধি ও আনন্দ বরাদ্দ ছিল ; সেটা পাশ কাটিয়ে চলে যাবে । অতীতেও জীবন থাকে না , ভবিষ্যৎ এখনও আসেনি ; তাই বর্তমানে বাঁচা উচিত । বর্তমানের সাথে নিজেকে যুক্ত করাই যোগ । অতীতের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই ; তাকে একধারে সরিয়ে রেখে বর্তমান উপভোগ করুন ।...

কর্ণের মৃত্যু অর্জুনের কারণে হয়নি , শ্রী কৃষ্ণ একথা অর্জুনকে বললেন কর্ণের মৃত্যুর পর । #অজিত মাহাত

ছবি
মহাবীর কর্ণ - Spiritual Ajit কুন্তী বিবাহের পূর্বে দুর্বাসা মুনির কাছে আশীর্বাদ লাভ করেন যে , তিনি যে দেবতাকে স্বরণ করে পুত্র সন্তান চাইবেন , তাঁর ঔরসজাত সন্তান পাইবেন । তাই কুমারী কুন্তী কৌতূহল ও অজ্ঞান বশত সূর্যদেবকে প্রার্থনা করলেন এবং পুত্র সন্তান চাইলেন । কুমারী অবস্থায় সূর্য দেবের সহিত মিলনে তাঁর  কবজকুন্ডল পরিহিত এক তেজস্বী পুত্র সন্তান জন্ম হইল । কিন্তু কুমারী অবস্থায় সন্তান জন্মের কারণে লোকলজ্জার ভয়ে তাঁকে নদীতে ভাঁসিয়ে দিল । ভীষ্মের সারথী অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা কর্ণকে উদ্ধার করে নিজের পুত্র রূপে লালন পালন করতে লাগলেন । সূর্য পুত্র হওয়ায় ছোট থেকেই তাঁর বীর স্বভাব লক্ষ্য করা যায় । কুরু রাজকুমারদের গুরু দ্রোণাচার্যের কাছে অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষার জন্য গেলে , সুত পুত্র বলে কর্ণকে প্রত্যাখ্যান করেন । তখন কর্ণ , দ্রোণাচার্যের গুরু পরশুরামের কাছে শিক্ষা লাভ করতে যায় । কিন্তু পরশুরাম ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য কাউকে শিক্ষা দেন না । সেই জন্য কর্ণ নিজেকে ব্রাহ্মণ বলে পরিচয় দেন । অস্ত্র শিক্ষা দেওয়ার পর পরশুরাম স্বীকার করেছিলেন যে কর্ণ তাঁর সমতুল্য যোদ্ধা । কিন্তু একদিন পরশুরাম ...

দেহতত্ত্ব মতে মহাভারতের কুরু বংশ তালিকা ও তার আধ্যাত্মিক অর্থ জেনে নিন । #অজিত মাহাত

ছবি
বেদব্যাস - কুরু বংশ তালিকা - Spiritual Ajit ১/ শান্তনু = নির্বিকার ব্রহ্ম চৈতন্য ২/ গঙ্গা = চৈতন্যা প্রকৃতি ৩/ ভীষ্ম = আভাস চৈতন্য , বা অস্মিতা বা প্রভাস ৪/ সত্যবতী = জড় প্রকৃতি ৫/ বেদব্যাস = ভেদ জ্ঞান ( পরাশর ঋষির শুক্রজাত ) ৬/ চিত্রাঙ্গদ = ঐশ মহত্তত্ত্ব ৭/ বিচিত্রবীর্য = ঐশ অহংকার ৮/ অম্বিকা = সংশয় বৃত্তি ৯/ অম্বালিকা = নিশ্চয় বৃত্তি ১০/ ধৃতরাষ্ট্র = মন ( অন্ধ ) ১১/ পান্ডু = নির্মল বুদ্ধি ( ইনি পুরুষ হইয়াও নপুংসকবৎ ) ১২/ গান্ধারী = প্রবৃত্তি শক্তি ১৩/ বৈশ্য = প্রবৃত্তি আশক্তি ( গ্রহণ , ত্যাগ ) ১৪/ কুন্তী = নিবৃত্তি শক্তি ১৫/ মাদ্রী = নিবৃত্তি ১৬/ দূর্যোধনাদি = কামক্রোধাদি ১৭/ যুযুৎসু = যুদ্ধেচ্ছা ( ইনি যুদ্ধের প্রাক্কালে সসৈন্য পান্ডব পক্ষ অবলম্বন করেন ) ১৮/ যুধিষ্ঠির = আকাশতত্ত্ব ( শব্দ গুন ) ১৯/ ভীম = বায়ুতত্ত্ব ( শব্দ ও স্পর্শ গুন ) ২০/ অর্জ্জুন = তেজতত্ত্ব ( শব্দ , স্পর্শ ও রূপ গুন ) ২১/ নকুল = রসতত্ত্ব ( শব্দ , স্পর্শ , রূপ , ও রস গুন ) ২২/ সহদেব = পৃথ্বীতত্ত্ব ( শব্দ , স্পর্শ , রূপ , রস ও গন্ধ গুন ) ২৩/ দ্রৌপদী = কুলকুন্ডলিনী ২৪/ সুভদ্রা = অতিশয...

মহাভারতে দেহতত্ত্ব মতে ষটচক্রে কৌরবদের স্থান কোথায় ? - #অজিত মাহাত

ছবি
মহাভারতে কৌরব - Spiritual Ajit দূর্যোধন - যার সহিত অতি কষ্টে যুদ্ধ করতে পারা যায় , তাহাই দূর্যোধন । রিপুর মধ্যে দুর্যোধনকে কামের সাথে তুলনা করা হয় । দূর্যোধন মূলাধার চক্রে পান্ডবদের বিরুদ্ধে অবস্থান করে । দূঃশাসন ও জয়দ্রথ - দুঃশাসন হল ক্রোধ ও জয়দ্রথ হল মৃত্যু ভয় । পরস্পর সাপেক্ষ বলে ইহারা একত্রে স্বাধীষ্ঠান চক্রে পান্ডবদের বিরুদ্ধে অবস্থান করে । কর্ণ ও বিকর্ণ - কর্ণ হলো কর্ত্তব্য কর্ম বা রাগ এবং বিকর্ণ হলো অকর্ত্তব্য কর্ম বা দ্বেষ । কর্ণ ও বিকর্ণ উভয়েই মণিপুর চক্রে পান্ডবদের বিরুদ্ধে অবস্থান করে । শকুনি - ইনিই ' মোহ ' উৎপন্ন করে দুই পক্ষকে যুদ্ধে প্রবৃত্ত করিয়েছিলেন । শল্য - ইনি হচ্ছেন জীবের সংস্কারজ হচ্ছে কর্ম ; জীবের সংসার বন্ধনের কারণ । ইনি বিশুদ্ধ চক্রে পান্ডবদের বিরুদ্ধে অবস্থান করেন । ভীষ্ম , দ্রোন ও কৃপ - এনারা হলেন রিপুদের মধ্যে মৎসরতা । ইনারা একত্রে আজ্ঞা চক্রে অবস্থান করেন । অশ্বত্থামা - অশ্বত্থামা হল কর্মফল । তাই তিনি প্রত্যেক রিপুতে এবং প্রত্যেক চক্রে অবস্থান করেন । কৌরব , দূর্যোধন - Spiritual Ajit

মহাভারতে দেহতত্ত্বের বিশ্লেষনে পাঁচ পান্ডবদের স্থান কোথায় ? এবং তাঁদের নামের গুরুত্ব কি ? - #অজিত মাহাত

ছবি
মহাভারতে পান্ডব - Spiritual Ajit সহদেব -  সহ = সহিত , দেব = যে খেলা করে । অর্থাৎ দেবের সহিত যে খেলা করে সে সহদেব । সহদেব হলো পৃথ্বীতত্ত্ব , যার গুন - শব্দ , স্পর্শ , রূপ , রস ও গন্ধ । এই পাঁচ গুনের সঙ্গেই জীবের ঘনিষ্ঠতা বেশি । এই ঘনিষ্ঠ তার জন্যই শরীরাভিমান প্রবল । সহদেব কে পঞ্চভূতের মধ্যে ক্ষিতি অর্থাৎ পৃথিবীর সাথে তুলনা করা হয় । ছয় জ্ঞান সাধনার মধ্যে সহদেবকে ' শম ' এর সাথে তুলনা করা হয় । লৌকিক ব্যাপার হইতে মনকে নিবৃত্তি করা বা দূরে সরিয়ে রাখাই হলো ' শম ' । ষটচক্রের মধ্যে ' মূলাধার ' চক্রে স্থান হয় সহদেবের । সহদেব - Spiritual Ajit নকুল - নকুল হলো রসতত্ত্ব । যার গুন - শব্দ , স্পর্শ , রূপ ও রস । যত প্রকারের রস আছে , তা ভোগ করে শেষ করতে পারা যায় না , অর্থাৎ ভোগের দ্বারা রসের কুল বা সীমা পাওয়া যায় না ; এই জন্য রসতত্ত্বের নাম নকল । নকুল কে পঞ্চতত্ত্বের মধ্যে অপ্ অর্থাৎ জলের সাথে তুলনা করা হয় । ছয় জ্ঞান সাধনার মধ্যে নকুল কে ' দম ' এর সাথে তুলনা করা হয় । ভোগ্য বস্তুর প্রতি আসক্তি না রাখা বা নিজের পঞ্চইন্দ্রিয়কে দমিয়ে রাখাই হল ...

কেন মনে হয় , ভালো মানুষদের সাথেই যত অন্যায় হয় ? জেনে নিন ... - #অজিত মাহাত

ছবি
ভালো মানুষদের সাথেই যত অন্যায় - Spiritual Ajit এই পৃথিবীতে অনেক রকমের মানুষ আছেন । কিছু মানুষ খারাপ কাজ করতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না , কোন ভয় ছাড়াই তাঁরা খারাপ কাজ করে ফেলেন । আবার এমনও কিছু মানুষ আছেন , যাঁরা খারাপ কাজ করতে খুবই ভয় পান । উনারা ভাবেন যে , এই খারাপ কাজ করলে অবশ্যই তার শাস্তি পেতেই হবে । পাপ - পূন্যের জ্ঞান তাদের থাকে । কিন্তু তা সত্ত্বেও ভালো মানুষদের সাথেই যত অন্যায় হয় । কিন্তু তা কেন ! আসলে কিন্তু ভালো মানুষদের সাথে কোন অন্যায় হয় না । যদি কোন মানুষ আগের জন্মের কর্মের ফলে সৎ - জ্ঞান লাভ করে থাকেন । তার ফলে সেই মানুষ সদাচারী ও ঈশ্বর অনুরাগী হয় । এই প্রকার মানুষ মায়াময় সংসারের সকল প্রকার দুঃখ-কষ্ট , অশান্তি থেকে চিরকালের জন্য মুক্তি পেতে মোক্ষ লাভের জন্য কর্মফল ক্ষয় করতে থাকেন । সেই সদাচারী মানুষ , বিগত সমস্ত জন্মের পাপ কর্মের ফল শীঘ্রই ভোগ করে নেওয়ার সংকল্প নেন । সমস্ত পাপের ফল ভোগ শেষ হলেই মানুষ ঈশ্বর লাভ করিতে পারেন । এই  জন্য মুক্তিকামী সদাচারী মানুষদের জীবন খুবই দুঃখ - কষ্ট ও অশান্তির মধ্যে কাটে । তাঁদের সাথে বারংবার অন্যায় ও অবিচার হয় ...