পোস্টগুলি

জ্ঞান ও বিজ্ঞান কাকে বলে ? What is Knowledge and Science ? - #অজিত মাহাত

ছবি
What is Knowledge and Science - Spiritual Ajit যার দ্বারা মানুষ নিজেকে জানতে ও বুঝতে পারেন বা মানুষ তাঁর আদি সত্ত্বাকে আমি বলিয়া জানিয়া ও বুঝিয়া থাকেন , ঐ রূপ ' আত্মজ্ঞান ' - কেই ' জ্ঞান ' বলে । জ্ঞানকে কাজে পরিণত করার শক্তিই হলো ' বিজ্ঞান ' । আমরা যদি দেহকে রথের সাথে তুলনা করি , তাহলে আত্মা হল সেই রথের আরোহী , সারথী হল বুদ্ধি , পাঁচটি ইন্দ্রিয় তথা - চোখ , কান , জিভ , নাক , ও ত্বক হল সেই রথের ঘোড়া । সারথীর হাতে যে লাগামটি ঘোড়ার সাথে বাঁধা থাকে , সেই লাগামটি হল আমাদের মন । তাহলে এখানে বিজ্ঞান কোনটা ? যার দ্বারা এই দেহরথ দ্রুত গতিতে গড়িয়ে চলে অর্থাৎ সেই রথের চাকাই হল ' বিজ্ঞান ' । মানব জীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা অপরিসীম । বিজ্ঞান মানব জীবনের কর্ম প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ - সরল ও দ্রুত করে দেয় । জীব মায়ার বশে বিষয় - বাসনায় জড়িত হয়ে সংসার মোহে  মোহিত ও আত্মহারা হয়ে নিজেকে না জেনে ' আমার আমার ' করে পাগল হয় , এইরূপ অবস্থাই হলো ' অজ্ঞান ' । আবার সাধক যখন সমাধি অবস্থায় এসে নিজেকেও ভুলিয়া বিশ্বচিন্তায় বিরজিত হয়ে ' ব্রহ...

গুরু কাকে বলে ? শিষ্য কাকে বলে ? - #অজিত মাহাত

ছবি
গুরু ও শিষ্য কাকে বলে ? - Spiritual Ajit 'গু' শব্দে অন্ধকার এবং 'রু' শব্দে আলোক । যিনি অজ্ঞান রূপ অন্ধকার নাশ করে জ্ঞানালোক প্রকাশ করে থাকেন , তিনিই গুরু । কাম , ক্রোধ , লোভ , মদ , মোহ ও মাৎসর্য্য - এই ছয় রিপুকে যিনি জয় করিয়াছেন , যিনি আধ্যাত্মিকতার বিমল পথ অবগত করিয়াছেন , যিনি নিষ্কপট ভাবে ইন্দ্রিয় দমন করতে পারেন , যিনি সত্যবাদী , সর্বদা ধর্মের পথে চলেন , যিনি স্থির , মন পবিত্র , যিনি আত্মদর্শন করিয়াছেন , এইরূপ জ্ঞানী , সত্যের প্রতি উৎস্বর্গী ব্যাক্তি গুরু হইবার যোগ্য । আমাদের জন্ম দানকারী পিতা - মাতা হলেন পরম গুরু । বাল্যকাল থেকে যিনি আমাদের সামাজিক শিক্ষায় শিক্ষিত করেন , তিনি হলেন শিক্ষা গুরু । সর্বোপরি পরমাত্মাই হল আমাদের আদি গুরু । পরমাত্মার প্রতি ভক্তি , শ্রদ্ধা , বিশ্বাস ও সমর্পণ থাকিলে , তিনি আমাদের মোক্ষ লাভ করাইয়া তাঁর সহিত যুক্ত করে নেন । যিনি নিষ্কপট ভাবে গুরুকে ভক্তি করেন , গুরু ও ভগবানে ভেদ জ্ঞান করেন না , যিনি নিজের জ্ঞান বুদ্ধি কোন কার্যে প্রয়োগ করেন না , যিনি শূন্য মস্তিষ্কে গুরুর নিকট ভক্তি , শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস এর সহিত জ্ঞান লাভ ক...

সৎ পাত্রে দান - কথাটির তাৎপর্য কি ? - #অজিত মাহাত

ছবি
সৎ পাত্রে দান - Spiritual Ajit পৃথিবীর সমস্ত জীবের প্রাণ , পরমাত্মা রূপ একটি সূতোয় গাঁথা থাকে । কিন্তু কর্মফলের বন্ধনে বাঁধা থাকায় , প্রত্যেকটি প্রাণ একে অপরের সংস্পর্শ থেকে আলাদা থাকে । কর্মফলের বন্ধন থেকে মুক্ত মানুষ অর্থাৎ আত্মজ্ঞানী মানুষ জানেন , যে তিনি অপরের থেকে আলাদা নন । প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক মানুষের আত্মা একটিই , সেটি হল পরমাত্মা । উপযুক্ত জ্ঞানের অভাবে মানুষ নিজেকে অপরের থেকে আলাদা ভাবে । যদি কোন মানুষ , অপর কোন ব্যাক্তিকে ভালোবাসেন ; জানবেন যে তিনি ঈশ্বরকে ভালোবাসছেন । কারণ সেই ব্যক্তির মধ্যে ঈশ্বরের অংশ - রূপ আত্মা রয়েছেন । আবার যে ব্যাক্তি অপর ব্যাক্তিকে ভালোবাসছেন , তার মধ্যেও ঈশ্বরের অংশ - রূপ আত্মা রয়েছেন । হিসেব মতো অপরকে ভালোবাসা মানে নিজেকেই ভালোবাসা । কারণ সেই ভালোবাসা যা আপনি অন্যকে দিচ্ছেন তা সুদ সমেত আপনার কাছেই ফিরবে । সেই জন্যই তো স্বামী বিবেকানন্দ  বলেছেন ' '  জীবে প্রেম করে যেই জন , সেই জন সেবিছে ঈশ্বর ' ' । সৎ পাত্রে দান - Spiritual Ajit আবার উপরোক্ত ঘটনার অনুরূপভাবে বলা যায় , অপরকে  ঘৃণা করা মানে নিজেকেই ঘৃণা করা । কারণ সেট...

স্বর্গ ও নরক প্রকৃতপক্ষে কি ? - #অজিত মাহাত

ছবি
স্বর্গ ও নরক কি ? - Spiritual Ajit স্বর্গ ও নরক বলতে মহাবিশ্বের কোন প্রান্তে কোন নির্দিষ্ট জায়গা বিশেষ নয় । স্বর্গ ও নরক হলো এই পৃথিবীতে দৃষ্ট সমাজেরই মানুষের অনুভব এর একটি অবস্থা । মানুষ এই জীবনে হোক বা পর - জীবনে হোক , এই সমাজেই স্বর্গ ও নরক অবস্থা ভোগ করিয়া থাকেন । নিজ অবস্থানে সন্তুষ্ট থাকায় হল স্বর্গাবস্থা । এবং নিজ অবস্থানে অসন্তুষ্ট থাকায় হল নরকাবস্থা । এই সমাজেই যে অবস্থায় মানুষ সুখ , শান্তি ও আনন্দ ভোগ করিয়া থাকেন , এবং সেই অবস্থায় যদি তিনি সন্তুষ্ট থাকেন ; জানবেন যে তিনি স্বর্গে আছেন । আবার যে অবস্থায় মানুষ দুঃখ , অশান্তি ও কষ্ট ভোগ করিয়া থাকেন এবং সেই অবস্থায় যদি তিনি অসন্তুষ্ট থাকেন ; জানবেন যে তিনি নরকে আছেন । যদি মানুষ দুঃখ , অশান্তি ও কষ্ট ভোগ করেও সন্তুষ্ট থাকেন এবং যদি সুখ , শান্তি ও আনন্দ ভোগ করেও অসন্তুষ্ট থাকেন তাহলে জানবেন সেই মানুষ মর্ত্যলোকে কর্ম সাধনার মধ্যে আছেন । মর্ত্যলোকে শুভাশুভ কর্মানুযায়ী স্বর্গ ও নরক লাভ হয় । এই পৃথবীতে কর্মানুসারে উচ্চ - নীচ যোনিতে কর্মফল ভোগের জন্য জন্ম হয়ে থাকে । স্বর্গ ও নরক কি ? - Spiritual Ajit ...

আত্মজ্ঞানী ব্যাক্তি নিজেকে কেন ঈশ্বর রূপে উপলব্ধি করেন ? - #অজিত মাহাত

ছবি
 আত্মজ্ঞানীই ঈশ্বর - Spiritual Ajit যাদের আত্মজ্ঞান হয় নাই , তাঁরা নিজেকে সামান্য ক্ষুদ্র জীব মনে করে । কিন্তু যাদের আত্মজ্ঞান হয়েছে , তাঁরা নিজেকে সামান্য ভাবে না । তাঁরা নিজেকেই ঈশ্বর রূপে উপলব্ধি করে থাকেন । যদি বলেন কিভাবে , তাহলে একটু চিন্তা করে দেখুন । সমুদ্রকে পরমাত্মা ভেবে একবার কল্পনা করুন । সমুদ্রের জল বাষ্প হয়ে মেঘে পরিণত হয় , সেই মেঘ বর্ষা হয়ে পৃথিবীর উপর ঝরে পড়ে । সেই বৃষ্টির জলে পৃথিবীর সমস্ত জীব - কুল প্রাণী ও উদ্ভিদ জীবন ধারণ করে , এছাড়াও সেই জল নানা কার্য সম্পাদন করে সমুদ্রে ফিরে যায় । সেই জল কোন প্রকার বন্দি থাকে না তাই সহজেই সমুদ্রের সাথে মিশে যায় । যদি একটি বোতল ভর্তি জলকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় তুমি কে ? ( যদিও সে জড় পদার্থ , কথা বলতে পারে না ; তবুও তার মার্গ - দর্শন করে উত্তরটা বুঝুন ) সেই বোতলভর্তি জল উত্তর দিবে আমি সামান্য একটু জল মাত্র । এবার সেই বোতলের ঢাকনা খুলে দিয়ে সমুদ্রে ডুবিয়ে দিয়ে যদি বোতলের জলকে জিজ্ঞেস করা হয় , তুমি কে ? তখন কিন্তু সেই জল আর নিজেকে সামান্য ভাববে না , সে বলবে আমিই সমুদ্র । কারণ সেই জল তখন সমুদ্রের ...

স্বভাব কি ? What is Nature ? - #অজিত মাহাত

ছবি
What is Nature - Spiritual Ajit স্বভাব কথার অর্থ হল নিজস্ব ভাব বা নিজস্ব প্রকৃতি । মানুষের স্বভাব দুই ভাবে গঠিত হয় । ক্রিয়মান কর্মের দ্বারা এবং বর্ণ বা জাতি ও কুল ভেদে মানুষের স্বভাব ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে । ক্রিয়মান কর্মের ফলে দুই রকম সংস্কার সৃষ্টি হয় । শুদ্ধ বা পবিত্র সংস্কার এবং অশুদ্ধ বা অপবিত্র সংস্কার । শাস্ত্রবিহিত কর্ম করার ফলে যে সংস্কার হয় , সেগুলি শুদ্ধ ও পবিত্র হয় । আবার শাস্ত্র , নীতি , লোক মর্যাদার বিরুদ্ধ কর্ম করলে যে সংস্কার হয় , তা হয় অশুদ্ধ ও অপবিত্র । এই শুদ্ধ ও অশুদ্ধ সংস্কার নিয়েই মানুষের স্বভাব বা প্রকৃতি গঠিত হয়ে থাকে । মানুষের সংস্কারে অশুদ্ধ অংশের বিনাশের এর ফলে স্বভাব শুদ্ধ , নির্মল ও পবিত্র হয়ে যায় । কিন্তু যেসব পূর্বকৃত কর্মের দ্বারা বা বর্ণ - জাতি ও কুল ভেদে সংস্কার গঠিত হয় , সেই কর্মগুলির ভিন্নতার জন্য জীবন্মুক্ত পুরুষদের স্বভাবেও নানা ভেদ থেকে যায় । এই স্বভাবের বিভিন্নতার কারণেই তাদের দ্বারা বিভিন্ন রকমের কর্ম হতে দেখা যায় , কিন্তু সেই সব কর্ম দোষযুক্ত হয় না । যেমন বাঘ ঘন বনে সন্তুষ্ট থাকে , সিংহ গুহায় আশ্রয় নেয় , হংস চাই পদ্মপু...

কর্মফল কি ? - #অজিত মাহাত

ছবি
কর্মফল কি ? - Spiritual Ajit শুভ - অশুভ কর্মের ভিত্তিতে মানুষের পূণ্য ও পাপ হয়ে থাকে । শুভ কর্ম বা ভালো কাজ বা সৎকর্মের ফলে মানুষের পূণ্য লাভ হয় । পুণ্যের ফলে মানুষ সুখ , শান্তি ও আনন্দ লাভ করে থাকে বা স্বর্গ লাভ হয় । অশুভ কর্ম বা খারাপ কাজ বা অসৎকর্মের ফলে মানুষের পাপ হয়ে থাকে । পাপের ফলে মানুষ দুঃখ , অশান্তি ও কষ্ট পেয়ে থাকে বা নরক লাভ হয় । প্রত্যেক মানুষকে তার কর্মের ফল পেতেই হবে , এটা অবশ্যম্ভাবী । কর্মফল ভোগ সম্পূর্ণ না হলে মানুষের মুক্তিলাভ বা মোক্ষ হয় না । যে - সকল পাপ কর্মের ফল জেল , জরিমানা , নিন্দা , অপমান ইত্যাদি রূপে এখানেই ভোগ করা হয়ে গেছে , সেই সব পাপের ফল আর মরণের পরে ভোগ করতে হয় না । কিন্তু মানুষটির পাপের পরিমান কতটা ছিল এবং তার ভোগই বা কত পরিমান কমে গেল অর্থাৎ সেই পাপ কর্মের ফল সে পুরোটাই ভোগ করল না কিছু বাকি থেকে গেল - এর হিসাব মানুষের অজানাই থেকে যায় । এর হিসাব থাকে ভগবানের কাছে । পাপের ফল যতটা সে কম ভোগ করেছে মরণের পর তাকে সেটা অবশ্যই ভোগ করতে হবে । ইহলোকে যে পাপের ফল ভোগ করা হয়ে যায় , তাতে অল্পের উপর দিয়ে নিস্কৃতি লাভ হয় , অল্পেই শুদ্ধি ঘটে ...