|
যুধিষ্ঠিরের পাশা খেলা - Spiritual Ajit |
মহাভারতের লীলার অন্তিম সময়ে শ্রী কৃষ্ণের বাল্যকালের বন্ধু তথা ভক্ত উদ্ভব শ্রী কৃষ্ণকে জিজ্ঞেস করেন যে , তিনি পান্ডবদের আত্মীয় তথা বন্ধু হয়েও , পাশা খেলার সময় তিনি কেন যুধিষ্ঠিরকে সাহায্য করেনি ; তিনি যদি চাইতেন তো পাশা খেলার পরিণতি অন্যরকম হতো বা দ্রৌপদীর পরিস্থিতিও অন্য হতো । শ্রী কৃষ্ণ উদ্ভব কে বলেন যে , হার বা জিত পরিস্থতিতে বিবেকের উপর নির্ভর করে । পরিস্থিতি আসে ভাগ্যের দ্বারা , কিন্তু পরিস্থিতিতে কি নির্ণয় নেওয়া হবে সেটা ভাগ্য নির্ধারণ করে না । ঐ সময় দুর্যোধনের ধণ - সম্মত্তির অভাব ছিল না , কিন্তু তিনি পাশা খেলতে জানতেন না ; তাই তিনি তাঁর হয়ে শকুনিকে খেলতে বলেন । সেই সময় দুর্যোধনের অশুভ হলেও নির্ণয়টা বিবেকপূর্ণ বা সঠিক ছিল । কিন্তু যুধিষ্ঠির কি তাঁর হয়ে পাশা খেলতে আমাকে বলতে পারত না ! যদি খেলাটা শকুনির সাথে আমার হতো তাহলে পরিণতি কি অন্য হতো না । আমিও তো যুধিষ্ঠিরের পিসতুতো ভাই । কিন্তু যুধিষ্ঠির বিবেকহীন হয়ে , বাধ্য হয়ে হোক বা কারো ছলনাতে হোক , আমাকে ঐ সভায় না আসার জন্য বলেন । আমি যুধিষ্ঠিরের বচনের বন্ধনে বাঁধা ছিলাম ; কিন্তু পারতাম না কি , সমস্ত বচন ভঙ্গ করে , দ্রৌপদীকে বাজী রাখা থেকে আটকাতে । যুধিষ্ঠির রাজ্য সহ সমস্ত সম্পত্তি হেরে যাওয়ার পরও পান্ডবরা নিজেদের ভাগ্যের দোহাই দিতে থাকে ; ঐ সময় একবারও তাদের কি আমাকে মনে পড়েনি । আর দ্রৌপদী , সে তো তখন আমাকে ডাকলো না , যখন দুঃশাসন তাঁকে টানতে টানতে সভার মধ্যে নিয়ে আসলো । তাঁর ততক্ষণ পর্যন্ত আমার কথা মনে পড়েনি যতক্ষণ পর্যন্ত না সে শক্তিহীন হয়ে পড়ে । যখন তাঁর আর নিজের সম্মান বাঁচানোর পর্যাপ্ত শক্তি রইলো না , তখনই তাঁর আমার কথা মনে পড়ে । আমি আগেই ঐ সভাতে যেতে পারতাম , কিন্তু প্রত্যেককেই তাঁর কর্মের ফল ভোগ করতে হয় । পরিস্থিতি আসে ভাগ্যের ফলে , কিন্তু পরিস্থিতিতে সঠিক নির্ণয়ই হল কর্ম । ভাগ্যের ফলে আসা পরিস্থিতিতে পান্ডবরা ঐ সময় সঠিক নির্ণয় নিতে পারেনি ; সেই জন্যই ঐ সভায় যেতে আমার দেরী হয়েছিল । আমি কিন্তু অপেক্ষায় ছিলাম , কখন পন্ডবরা আমাকে ডাকে । সৎ ব্যাক্তির ডাকে আমি সর্বদা সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকি ।
|
দ্রৌপদী - Spiritual Ajit |
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন